০৩-অক্টোবর-২০২৪
০৩-অক্টোবর-২০২৪
Logo
সম্পাদকীয়

প্লাস্টিক দূষণ থেকে সাবধান, বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করুন

দিন পরিবর্তন ডেস্ক

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০৩-০৪ ২০:৫২:২২
...

মানুষ তো বটেই, পশু-পাখি, গাছপালাসহ যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, সেখানে পানি অপরিহার্য। আর মানুষের জীবন পানি ছাড়া কল্পনা করা যায় না। সমগ্র জীবজগতকে টিকিয়ে রাখতে হলে বিশুদ্ধ পানির প্রবাহ অনিবার্য। সেই পানি যদি নানাভাবে দূষিত হয়ে যায়, তাহলে অন্যান্য প্রাণীসহ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে।

দৈনিক দিনপরিবর্তন-এ প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়েছে, পানি ফোটালেও যায় না প্লাস্টিক কণা। পানি ফোটানোর পরও ১০ শতাংশ প্লাস্টিক কণা থেকে যাচ্ছে, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

পানীয় জল দূষণের সমস্যা নতুন নয়। নানাভাবে দূষিত হচ্ছে পানি। বিশেষ করে আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে অসতর্কভাবে পানির ব্যবহারে নানা উপাদান যুক্ত হচ্ছে পানিতে। তার মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক অন্যতম। নানা প্রক্রিয়ার পরও পানি থেকে মাইক্রো প্লাস্টিকের কণাকে দূর করা যায় না। এ প্লাস্টিক কণা ধীরে ধীরে মানুষের জীবনকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়। আধুনিক জীবনের শিল্পজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার প্রবণতা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েই চলেছে। একই সঙ্গে শিল্পকারখানার বর্জ্য দূষিত করছে বিশুদ্ধ পানির প্রবাহকে। শিল্পবর্জ্যরে ধারা নদী, খাল-বিল, জলাশয়- সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ছে। শিল্পকারখানাগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করে না। দিনের পর দিন পানি দূষণের এই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। দূষিত পানি খাল থেকে নদী, নদী থেকে সাগরে গিয়ে পড়ছে। এককথায় খাল-নদী-সাগরই দূষিত পানির আধার।

মানুষের জীবনকে সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন উপায়ে গ্রহণযোগ্য মাত্রার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে, তার মধ্যে শহুরে জীবনে বোতলজাত পানি অন্যতম। বড় বড় জারে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে, শিল্প-ফ্যাক্টরিতে এই পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ কিংবা স্বল্পমাত্রার পানীয় জল ব্যবহারে অপেক্ষাকৃত ছোট বোতলজাত পানি এখন হাট-বাজার, শহর ও রাস্তাঘাটের দোকানে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। এসব ব্যবস্থা গড়ে ওঠার একমাত্র কারণ পানীয় জলের প্রাকৃতিক উৎসগুলো দূষিত হয়ে পড়া। মানুষ আর কোনো উৎসের পানিকে স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ মনে করে না। প্রাকৃতিক পানির বাহ্যিক দূষণের পাশাপাশি গভীর মাত্রার রাসায়নিক দূষণ বা প্লাস্টিক দূষণ আরো ভয়াবহ। কোনো প্রক্রিয়ায় এই দূষণমাত্রাকে বিশুদ্ধতার পর্যায়ে আনা যায় না। ফলে পানির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েই চলেছে।

যেহেতু পানি ছাড়া প্রাণ অচল, সেহেতু পানিকে বিশুদ্ধ ধারায় প্রবাহিত হওয়ার যত বাধা চলমান, সবার আগে সেটা দূর করতে হবে। তারপর রাসায়নিক দূষণ, মাইক্রোপ্লাস্টিক কিংবা অন্যান্যভাবে যে পানির দূষণ ঘটছে তা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে পানি দূষণের উৎসগুলো শনাক্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়াতে হবে পর্যবেক্ষণ। আর মাইক্রো প্লাস্টিক দূষণ যেন না ঘটে, সেদিকে সতর্ক ব্যবস্থা জারি করতে হবে।

আমরা আশা করি, পানিদূষণের বিষয়ে মানুষ আরো সচেতন হবে। পাশাপাশি সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

 

/মামুন