ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ত্রি-ধারা বিভক্ত হয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম আকার ধারণ করছে। এ অবস্থার ফলে পৌর শহর থেকে শুরু করে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে এ দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটাই যেন স্থবির হয়ে পড়ছে। দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, অদক্ষ অযোগ্য নেতারা আহবায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়ায় দলে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম আকার ধারণ দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতেও তারা এক হতে পারেনি। পৃথক স্থানে ৩ টি গ্রুপ এ দলটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে।
দলের একাধিক নেতাকর্মী বলেন, আহবায়ক কমিটিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে এ উপজেলায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ চরম আকার ধারণ করছে। এ অবস্থার ফলে সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে। এক সময় যারা দলের দায়িত্ব নিয়ে সামনের কাতারে এসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতো একটি গ্রুপ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদেরকে মূল কমিটি থেকে দূরে রাখায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়।
মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী একাধিক নেতা বলেন, বর্তমানে যারা দায়িত্বে রয়েছেন তারা চায় না এ উপজেলায় বিএনপি শক্তিশালি হোক। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করুক। বর্তমান কমিটি সর্বস্থায় সাংগঠনিক কাজে দক্ষতার পরিচয় না দিয়ে তারা নানা অজুহাতে ব্যাক্তির উপর আক্রোশ চালিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বৃদ্ধি করায় সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার ছিল দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ওই দিন এ উপজেলায় ৩টি গ্রুপে স্বল্প পরিসরে পৃথকভাবে দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করে। এরমধ্যে বর্তমান কমিটির আহবায়ক জয়নাল আবেদীন আব্দু ও সদস্য সচিব মো. খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে পৌর এলাকার সড়ক বাজারে দলীয় কার্যালয়ে, সাবেক সভাপতি মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের খারকুটে তার বাসভবনে ও সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল মনসুর মিশনের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা শফিকুল আলমের মসজিদ পাড়ার বাড়িতে পালন করা হয়। প্রতিটি আয়োজনেই স্বল্প সংখ্যক বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তবে পৃথক তিন স্থানে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করায় নেতাকর্মীরা সেটাকে ভালো চোখে দেখেনি।
তিনটি গ্রুপের মধ্যে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারি আব্দুর রহমান সানির ভাই কবির আহমেদের অনুসারি হিসেবে পরিচিত হলেন উপজেলা বিএনপি’র বর্তমান কমিটি। অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য মুুশফিকুর রহমান ও বিগত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নাসির উদ্দিন হাজারির সমর্থক হিসেবে পরিচিত হলেন সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশনের গ্রুপ। অন্যদিকে সাবেক সভাপতি ও দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে আরেক গ্রুপ বিরাজমান। তবে মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে গ্রুপটি বেশ কিছু দিন বর্তমান আহবায়ক কমিটির অধিনে ছিল। কিন্তু বর্তমান কমিটি রাজনৈতিক মাঠে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দক্ষতার পরিচয় দিতে না পারায় অবশেষে তারাও চলে আসেন।
দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, সংঘাত এড়াতে তারা ইচ্ছে করেই মাঠে নামেননি। এছাড়া সমাবেশের আগের রাতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ হানা দিয়ে হয়রানি করে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা।
মুশফিকুর রহমান ও নাসির উদ্দিন হাজারির সমর্থক এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বর্তমান কমিটি আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যে কারণে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তারা বাধ্য হয়েই আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকি পালন করেছেন। উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশন অগঠনতান্ত্রিকভাবে এবং আগের কমিটির ৪১ জনকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করে দলকে সাংগঠনিক ভাবে অনেক ক্ষতি করেছে। বেশিরভাগ নেতা-কর্মী আলাদা হয়ে কর্মসূচি পালন করছে।
সাবেক সভাপতি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমান কমিটি আন্দোলন ডাক দিয়ে পালন করেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছে। যে কারণে মর্যাদার কথা চিন্তা করে দলের নেতা-কর্মীরা আমার বাড়িতে এসে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকির অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।’
উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘মূল স্রোতের বাইরে গিয়ে কেউ যদি বাড়ি-ঘরে দলের প্রোগ্রাম পালন করে তাহলে তো তাদেরকে না করা যাবে না। ’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছি কি-না সেটা সবাই বুঝেছে। মূলত সার্বিক পরিস্থিতিতে সংঘাত এড়াতে আমাদের নেতা কবির আহমেদের নির্দেশে
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL