কাউখালী উপজেলায় সহস্রাধিক পরিবারে কয়েক হাজার মানুষ এখনো সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। উপজেলায় সুপেয় পানির জন্য সরকারি ভাবে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও তা ব্যক্তিস্বার্থে, দলীয়করণ, চেয়ারম্যান মেম্বরদের স্বার্থে স্থাপন করার অভিযোগ রয়েছে। কোথাও ১০ ফুট দূরত্বের মধ্যে ২টি, একটি বাড়িতেও ২টি এরকম করে ব্যক্তিস্বার্থে নলকূপ বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চিরাপাড়া, আমরাজুড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে এরকম গভীর নলকূপ বসিয়ে পারিবারিক ভাবে সরকারি সুবিধা গ্রহণেরও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে টিউবওয়েল নিয়ে দেয়াল করে রাখে যার ফলে নিজের পরিবার ছাড়া অন্য কেউ পানি ব্যবহার করতে পারে না। কেউ কেউ টিউবওয়েলের হ্যান্ডেলে তালা দিয়ে রাখে।
ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যান, জনস্বাস্থ্য, উপজেলা প্রশাসন সহ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বলেন, দুর্বল মনিটরিং এর কারনে এই রকম অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে সরকরি অর্থের গভীর নলকূপ ব্যক্তিস্বার্থে স্থাপন করা হচ্ছে। ফলে উপজেলা কয়েক হাজার মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলার পশ্চিম চিরাপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারেক আলী মীর জানান, তার এলাকায় অর্ধশতাধিক পরিবার রয়েছে অথচ এখানে একটি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা নেই। আমি সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ আলম সহ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা উপ-প্রকৌশলী জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বার বার আবেদন করেও একটি টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করতে পারেনি। অনেক কষ্ট করে দূর থেকে সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে হয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারি ভাবে ১৫০৭টি সচল গভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে ১নং সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নে ২৬৭টি, ২নং আমরাজুড়ী ইউনিয়নে ২০৯টি, ৩নং সদর ইউনিয়নে ৩৯৮টি, ৪নং চিরাপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়নে ৩১৩টি, ৫নং শিয়ালকাঠী ইউনিয়নে ৩২০টি রয়েছে। এছাড়াও ইউনিসেফ, কুয়েত ভিত্তিক সংস্থা এবং বিভিন্ন এনজিও শতাধিক গভীর নলকূপ স্থাপন করছে।
উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কমপক্ষে ১৫টি এলাকার মানুষ সুপেয় পানি থেকে এখনো বঞ্চিত রয়েছে। এর মধ্যে চিরাপাড়া গুচ্ছ গ্রামের একটি অংশ, চিরাপাড়া ভূমিহীনদের একটি অংশ, পশ্চিম চিরাপাড়া একটি বড় অংশ, ডুমজুড়ী গ্রামের একটি বড় অংশ, জোলাগাতি, মেঘপাল, ধাবড়ী, গন্ধর্ব, দত্তেরহাট সহ বিভিন্ন গ্রামের বৃহদ অংশবিশেষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত।
এসকল এলাকার ভুক্তভোগীদের দাবি যদি সমহারে গভীর নলকূপ গুলো জনসম্মুখে বসানো হয় তাহলে সবাই সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হবে না।
এ ব্যপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-প্রকৌশলী আব্দুর রহমান জানান, জনপ্রতিনিধিরা গভীর নলকূপের তালিকা তৈরি করেন ও তা বন্টন করেন বিধায় আমার কোন কিছু করার নেই। তবে আগামী ২ বছরের মধ্যে উপজেলার সকল জনগনকে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার সুযোগ রয়েছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL