২২-নভেম্বর-২০২৪
২২-নভেম্বর-২০২৪
Logo
সারাদেশ

পদ্মায় ভাঙন: শঙ্কা মুক্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২২-০৮-১৩ ১৮:২২:২৮
...

পাবনায় পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিলেও আশঙ্কামুক্ত রয়েছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।  রেলওয়ের ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম বলেন, 'হার্ডিঞ্জ ব্রিজ যখন নির্মাণ করা হয় তখন প্রমত্তা পদ্মায় অনেক গভীর পাইলিং করে করা হয়েছে।  সে সময় ব্রিজের সব গার্ডার পানিতে নিমজ্জিত ছিল।  একসময় নদীর এক পাড়ে চর পড়ায় বেশ কয়েকটি গার্ডারের নিচে মাটি জমে, এখন আবার চরের এ অংশ নদীতে মিলিয়ে যাচ্ছে, এতে ব্রিজের কোনো ক্ষতি হবে না'। 

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।' 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাদুল ইসলাম রিপন বলেন, যে পায়ার (পাকশী সাইড থেকে ৩ নম্বর) পাশে নদী ভাঙছে তাতে কোন সমস্যা নাই।  এই পায়াতে একসময় পানির মধ্যে ছিল, বর্তমানে চর হয়েছে।  পদ্মা নদী বিশ্বের মধ্যে অন্যতম খরস্রোতা নদী ফলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ভিত্তি অনেক গভীরে।  নদী ভাঙনে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। 

পাবনা অফিসের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কোহিনুর আলম বলেন, আমরা অনেকেই জানি পদ্মা নদী একটি খরস্রোতা নদী এই কারণে বিভিন্ন সময় ভাঙন দেখা দেয়, কোথাও চর জেগে উঠে, কোথাও ডুবো চর জেগে উঠে, আবার সেই চর ভাঙে এটাই এই নদীর চরিত্র।  আমরা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা পরিদর্শন করে দেখেছি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অনেক আগে জেগে উঠা একটি চরে ভাঙন ধরেছে সেটা পাকশী পাড়ের তিন নম্বর পায়ার পাশে।  গাইড ব্যাংক থেকে ভাঙন অনেক দূরে রয়েছে।  যখন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরী হয় তখন নদী আরো খরস্রোতা ও গভীর ছিল কাজেই ব্রিজের বেইজ অনেক গভীরে।  ফলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হুমকির সম্মূখীন এটা আমি মনে করি না।  এ ব্যাপারে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি না ছড়াতে অনুরাধ করছি। 

পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা চরে ভাঙন ধরেছে।  ওই এলাকায় পারমাণবিক বিদুৎ প্রকল্প, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতুসহ বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা রয়েছে।  এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদেরকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে নদীর পাড় ভেঙে পাকশী পাড়ের তিন নম্বর পায়ার (গার্ডার) কাছে চলে আসছে।  এটি একটি চর, গতবছর থেকে ভাঙছে, এবার ভেঙে চার নম্বর পায়া থেকে তিন নম্বর পায়ার কাছে চলে আসছে।  এখানে ভাঙন পাড়ে অনেকগুলো দোকান স্থায়ীভাবে ব্যবসা করছে।  প্রচুর পর্যটক দেখা গেছে।

পাকশী পাড়ের বাসিন্দা এবং ব্রিজের নিচের দোকানদার মো. রতন আলী বলেন, আমার জন্ম এই পাকশীতে, ছোটবেলা থেকে এই ব্রিজের আশপাশ নদী ভাঙা-গড়ার সঙ্গে আমি পরিচিত।  এই তিন নম্বর পায়া এক সময় নদীর মধ্যে ছিল।  কোনো এক সময় নদীর এই জায়গায় চর জেগে উঠে।  মানুষ আবাদ শুরু করে।  শহরের মানুষ বেড়াতে আসে।  বর্ষার সময় ডুবে যায় এই চর, এবার বর্ষা না হওয়ায় ডুবে নাই।  আমি প্রায় ১৫ বছর এই জায়গায় (চরে) দোকানদারী করি।  অনেক আগে যে চর জেগে উঠেছিল সেটা আস্তে-আস্তে ভাঙছে।  এখন আরো দু’টি পায়া চরের মধ্যে রয়েছে।  কয়েকদিন ধরে দেখছি ম্যাজিস্ট্রেট, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এবং সাংবাদিকরা আসছে, ভাঙন সর্ম্পকে আমাদের কাছে জানছে এবং ছবি উঠাচ্ছে।  শুনলাম পেপারে নাকি নিউজ ছাপা হয়েছে।  আমার মনে হয় কোনো শংকা নাই।  আমরা এই জায়গায় (ভাঙনের পাড়ে) দোকানদারী করছি ভয়হীন ভাবে।