নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈরি আবহাওয়ায় সাগরে প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে জেলে ট্রলার ডুবির ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলে ভোলার নিখোঁজ ৯ জেলের এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ ওই পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের কান্না যেন থামছে না। জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় স্বজনদের ফিরে পেতে চায় পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বৈরি আবহাওয়ায় সাগরে প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে গত ৯ আগস্ট পটুয়াখালী জেলার পায়রা বন্দর সংলগ্ন বঙ্গপসাগরের গভীরে ও ঢালচর সংলগ্ন সাগর মোহনায় ২৯ জেলে নিয়ে ইউসুফ মাঝি, কামাল মাঝি ও ইসমাইল মাঝির ৩টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এ সময় সাগরে থাকা অন্যান্য ট্রলারের জেলেরা ২৯ জেলের মধ্যে ২০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করলেও ৯ জেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছে। গত ৫ দিন ধরে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান না পাওয়ায় তাদে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ৯ জনের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা কেউ জানে না। দিন যতই যাচ্ছে নিখোঁজদের পরিবারে চলছে বেড়ে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারীতে ভারি হচ্ছে এলাকা।
সরেজমিনে ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ সৈয়দপুর গ্রামের গিয়ে দেখা গেছে, ৫ দিন স্বামীর জন্য আহাজারী করে প্রায় বাকরুদ্ধ দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ সৈয়দপুর গ্রামের নিখোঁজ জেলে মিজাম উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুম বেগম। ছেলে ফেরার অপেক্ষায় থাকা বৃদ্ধ বাবা মার বিলাপ থামছে না কোন আশ্বাসেই। মিজামের ২ শিশু ছেলেও বাবার ফেরার অপেক্ষায়। জীবিত না হোক মৃত উদ্ধারে সরকারের সহায়তা চান স্বজনরা।
শুধু মিজামের বাড়িতে নয় একই অবস্থা নিখোঁজ অপর ৮ জেলে পরিবারে। বাড়ি বাড়ি চলছে আহাজারী। সময়ের সাথে বাড়ছে স্বজন হারানোর শঙ্কা প্রবল ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করে সাগরে যাওয়ার সাধ্য নেই তাই মেঘনার তীরেই নিখোঁজদের ফেরার অপেক্ষায় অনেক স্বজন।
দৌলতখান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল হাসান জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্ট গার্ড অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।
সেদিনের দুর্ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল এটা না জানলেও জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় স্বজনদের ফিরে পেতে চায় পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, বৈরি আবহাওয়ায় সাগরে প্রচন্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে মঙ্গলবার পটুয়াখালী জেলার পায়রা বন্দর সংলগ্ন বঙ্গপসাগরের গভীরে ১৩ জেলেসহ ইউসুফ মাঝির মাছধরার ট্রলার ও ঢালচর সংলগ্ন বঙ্গপসাগরের ১৬ জেলে নিয়ে কালাম ও ইসমাইল মাঝির মাছ ধরার তিনটি ট্রলার ডুবে যায়। এসময় কামাল মাঝির ট্রলারের ৮ জেলের সকলে জীবিত উদ্ধার হয়। এছাড়া একই এলাকায় ইসমাইল মাঝির ট্রলারে থাকা ৮ জেলের মধ্যে ৭ জেলে জীবিত উদ্ধার হলেও ১ জেলে নিখোঁজ থাকে। অন্যদিকে ইউসুফ মাঝির ট্রলারের ১৩ জেলের মধ্যে ৫ জেলে জীবিত উদ্ধার হলেও ৯ জেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL