২২-নভেম্বর-২০২৪
২২-নভেম্বর-২০২৪
Logo
সারাদেশ

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে পজিটিভ ঢাকার ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন।

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২২-০৯-১৯ ১৯:০০:৪২
...

জন্মের পর পরিবারের মাঝে হেসে খেলে বেড়ে উঠবে শিশুরা এটাই তো নিয়ম।  পর্যাপ্ত ভালোবাসা, স্নেহ, খাদ্য, সুশিক্ষা, চিকিৎসা পাওয়া তো সবারই অধিকার।  তবে আমাদের সমাজে এমন কিছু শিশু রয়েছে যারা বেড়ে উঠছে পথে ঘাটে।  ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের কারণে এরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন।  আমাদের সমাজে উপেক্ষাকৃত বড় একটি অংশ এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা।  কখনও খেয়ে না খেয়ে কখনও বা আধপেটা খেয়ে দিন কাটে তাদের।  তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু খাদ্যের জোগান দিতে রাস্তায় রাস্তায় প্লাস্টিক কুড়িয়ে বিক্রি করে।  যেখানে তিন বেলার খাদ্য জোগানোই তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ সেখানে অন্যান্য চাহিদা পূরণ অনেকটাই বিলাসিতা।  সমাজের এমনই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে মানবিক সংগঠন পজিটিভ ঢাকা।  প্রতিষ্ঠা করেছে পজিটিভ স্কুল। যেখানে পরম মমতায় বাচ্চাদের মৌলিক ও নৈতিকতার শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি দেওয়া হয় এক বেলার খাবারও।  গত ১৫-ই সেপ্টেম্বর ছিল মানবিক এই সংগঠনটির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।  দিনটি তারা উদযাপন করেছে রেলওয়ে স্টেশনে থাকা ৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে। 

অনিশ্চিত জীবন নিয়ে পথে পথে বেড়ে উঠা শিশুদের আনন্দ ও বিনোদন দেয়ার জন্য পজিটিভ ঢাকা এই দিনটি পালন করে ভিন্ন আঙ্গিকে।  আয়োজনে ছিল ৫০ জন শিশুর জন্য আনন্দদায়ক ৪টি খেলা এবং খেলাগুলোতে ১ম, ২য়, ৩য় স্থান অধিকারীদের করা হয় পুরষ্কৃত।  আনন্দ ও বিনোদনদানের পাশাপাশি দেওয়া হয় এক বেলার খাবারও।  পজিটিভ স্কুলের কো-অর্ডিনেটর শাহিনা নদী বলেন, ‘পজিটিভ স্কুল’ ভালোবাসা, নৈতিকতা ও সুশিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি মানবিক প্ল্যাটফর্ম।  সমাজের উপেক্ষাকৃত বড় একটি অংশ এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা।  পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুগুলো খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ছে মাদকে।   খাদ্যের অভাব ও মাদকের জোগান দিতে প্রতিনিয়তই জড়িয়ে যাচ্ছে নানা রকম অপরাধের সাথে।   তাই স্কুলে পাঠদানের পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করছি শিশুদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে।   সেই সাথে নিশ্চিত করতে চাই তাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ। "  

পজিটিভ ঢাকা সংগঠন  মূলত যাত্রা শুরু করে অসহায় মানুষের  রক্তদানের মাধ্যমে।  মানবিক সংগঠনটি এই পর্যন্ত দুই হাজার ব্যাগের অধিক ডাটাবেজসহ রক্তের ব্যবস্থা, করোনাকালীন সময়ে একশোর অধিক করোনা আক্রান্ত রুগীকে ফ্রি অক্সিজেন সেবা, ভিক্ষুকদের ওজন মাপার মেশিন, ভ্রাম্যমান চায়ের দোকানের জন্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা ছাড়াও করেছেন মার্জিয়া, সুলতানা, হাসান, দিদার, আহাদ, মৌসুমির মায়ের মতো অনেক অসহায় মানুষদের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা।  পজিটিভ ঢাকা আয়োজিত অনন্য একটি আয়োজন ছিল ‘ভালো থাকুক ফুলগুলো'।  আয়োজনটি এ বছর মার্চ মাসে জাতীয় ক্যন্সার গবেষণা ইনিস্টিউট ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয়।   মূলত ৪০ জন ক্যন্সার আক্রান্ত বাচ্চাদের ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।   সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এম.এম. আরিফুল ইসলাম বলেন, " পজিটিভ ঢাকা একটি অরাজনৈতিক, ইতিবাচক, সামাজিক ও মানবিক প্ল্যাটফর্ম।   আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষেরই নিজ অবস্থান থেকে দেশ, সমাজ ও মানুষের জন্য ইতিবাচক অবদান রাখার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।  এ লক্ষ্যেই কাজ করছে পজিটিভ ঢাকা।  মানবতার কল্যাণে জেগে উঠুক প্রতিটি প্রাণ মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে স্বপ্নের দেশ গড়ার লক্ষে আন্তরিকভাবে সদা ন্যায়ের পক্ষে, নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে পজিটিভ ঢাকা। আমরা এমন কিছু স্বেচ্ছাসেবী পেয়েছি যারা আসলেই অসাধারণ।   যেকোনো পজিটিভ কাজের জন্য তারা সদা প্রস্তুত।  "