চট্টগ্রাম দক্ষিণ :
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়ায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৬টি বসতবাড়ি।
শনিবার ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আব্দুল আলিম সিকদার পাড়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ওসমান গণি। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন, মৃত নজির আহমদের ছেলে মুহাম্মদ ইউনুছ, নজরুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, মৃত মুহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে জয়নাল আবেদীন ভুট্ট, আলী আহমদের ছেলে মকবুল আহমদ ও মৃত ফরিদ আহমদের স্ত্রী আরফা বেগম। ঘটনার খবর পেয়ে লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে ১ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মকবুল আহমদ বলেন, ঘটনার দিন বাড়িতে আমি একাই ছিলাম। ভোর ৪টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে ধানক্ষেতে পানি দেবার জন্য বাড়ির পাশে জমিতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে আশপাশের মানুষের চিৎকারে আগুন আগুন শুনতে পাই। আগুনের শিখা দেখে আমি হতাশ হয়ে যায়। আমার স্বপ্ন পুড়ে শেষ হয়ে যায়। পুড়ে যায় গোলা ভরা ধান ও বাড়ির আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। তবে অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থরা আমাকে দোষারুপ করছেন।
এটি দুর্ঘটনা ছাড়া কিছুই নয়। মূলত আগুনের সূত্রপাত আমার বাড়ি থেকেই হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ক্যান্সার আক্রান্ত মুহাম্মদ ইউনুছের ছেলে সাজ্জাদ বলেন, ঘটনারদিন আমরা সবাই ঘুমের মধ্যে ছিলাম। রাত সাড়ে ৪টার সময় বাড়ির চারদিকে আগুন দেখে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হই এক কাপড়ে। মকবুল আহমদের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। আমাদের জানে মেরে ফেলার জন্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় আমাদের মূল্যবান জিনিসপত্র, কাগজপত্র সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। ঘটনার সময় মকবুল হোসেন বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত মানুষ তা ভাল করে জেনে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ আরফা বেগম জানান, আমার স্বামী মারা যাওয়ার কিছুদিন পর আমার ভাসুর মকবুল হোসেন সম্পত্তি দখল করার লোভে আমাকে ১ ছেলে ১ মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য করে। স্বামীর বাড়িতে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ও থাকার ঘরটি এখন পুড়ে গেছে।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্থরা দুই গ্রুপে বিভক্ত। মকবুল গং ও ইউনুচ গং পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনাটি আসলে দুর্ঘটনা নাকি পূর্ব পরিকল্পিত! সেটা তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেন তারা। লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র বলেন, আগুন লাগার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। ৬টি পরিবারের বসতঘর পুড়ে গেছে। আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি। একজন-অপরজনকে দোষ দিচ্ছেন। তারা যদি প্রকৃত ঘটনার জন্য আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL