নিজস্ব প্রতিনিধি
তাফহীমুল ইসলাম, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে আলাপ, আলোচনা। নির্বাচন কমিশনও জানিয়ে দিয়েছে, এপ্রিলের শেষ দিকে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে পারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের এই ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক থাকছে না। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় বিএনপি, জামায়াত। তাই এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রতীদ্বন্ধি হবে আওয়ামী লীগই।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা বিএনপি, জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে বেশ পরিচিত। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখানে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হয়। এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন বিএনপি নেতা আলমগীর কবির চৌধুরী। ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত অংশগ্রহণ করেনি। সেই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাবেক সংসদ সদস্য সুলতান উল কবির চৌধুরীর ছেলে চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করলেও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেননি। তিনি আবারও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। সেই লক্ষ্যে তিনি তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগও করছেন। এবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে পারেন বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রেহেনা আক্তার কাজমীও। তিনি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বরাবরের মতো এবারও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদুল আলম। তিনি একাধিকবার নির্বাচন করলেও জয়ের মুখ দেখেননি। এবার জয়ের মালা গলায় পড়তে বেশ আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন তিনি।
এছাড়াও বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক সিকদার, ছনুয়া ইউপি চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশিদ, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী সুমন, আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদাত রশিদ চৌধুরী, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়ামুন নাহার, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি রাশেদ আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিহাবুল হক সিকদারের নাম আলোচনায় রয়েছে। নারী, পুরুষ মিলে প্রায় এক ডজন নেতা, নেত্রী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকতে পারেন চার, পাঁচজন প্রার্থী। তবে আওয়ামী লীগের প্রতীদ্বন্ধি আওয়ামী লীগ হওয়ার কারণে নির্বাচন হবে বেশ উৎসবমুখর এবং লড়াই হবে সমানে সমান। উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও আরও এক ডজন নেতা, নেত্রীর নাম মাঠে ময়দানে শোনা যাচ্ছে।
সাবেক ছাত্রনেতা শিহাবুল হক সিকদার জানান, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চাই। সবার সাথে আলাপ আলোচনা করছি। আমি সকলের দোয়া ও ভালোবাসা প্রত্যাশা করছি। দীর্ঘদিন মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশিদ বলেন, দলীয় প্রতীক নেই। সাধারণ জনগণ চাইলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছি। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হলে আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারবো।
এব্যাপারে রেহেনা আক্তার কাজমী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই জনপদে রাজনীতি করার সুবাদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। মানুষও প্রতিদান হিসেবে ভোট দিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান বানিয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে আরও বড় পরিসরে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুণ মোল্লা জানান, নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্যনু্যায়ী বাঁশখালীতে ১১৪ টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৫ জন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এতে বড় কোন পরিবর্তন হবে না।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL