নিজস্ব প্রতিনিধি
মোঃ নাছির উদ্দিন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) :
সীতাকুণ্ডে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো বিভিন্ন স্থান থেকে কুড়িয়ে পরিবেশবান্ধব টেকসই রিসাইক্লিং করে পরিণত করা হচ্ছে পন্যে, তাতে বাড়ছে বিকল্প কর্মসংস্থান। যত্রতত্র অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা এসব প্লাস্টিক বোতল সহ অন্যান্য বর্জ্য এখন আর পরিবেশের জন্য হুমকি নয়, বরং সম্পদে পরিনত হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্যরে এসব ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে, তেমনি অসংখ্য বেকার যুবকের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃস্টিতে রাখছে বিশেষ অবদান।
প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো একদিকে মারাত্মক ক্ষতি করছে ফসলি আবাদী জমির, অন্য দিকে নালা, নর্দমায় জমা হয়ে পানি নিষ্কাশনে সৃষ্টি করছে প্রতিবন্ধকতা। বর্জ্যগুলো নালা-নর্দমায় জমা হয়ে চলাচলরত পানি আটকে পঁচে ছড়াচ্ছে উৎকট দূর্গন্ধ। আর আটকে থাকা দূর্গন্ধযুক্ত পানি পরিণত হচ্ছে মশার প্রজনন আখড়ায়। তাতে মারাত্মক ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য। সীতাকুণ্ডে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন টোকাই কিংবা ফেরিওয়ালা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে আড়তদারদের নিকট কেজি মূল্যে বিক্রয় করে নির্বাহ করছে নিজেদের সাংসারিক ব্যয়। আড়তদারদের নিকট খরিদ করে কিছু উদ্যোমী যুবক এসব প্লাস্টিক বর্জ্য টেকসই রিসাইক্লিং করে পণ্যে পরিণত করছে। এমন উদ্যোগী যুবকদের একজন উত্তর বাজারের ব্যবসায়ী উপজেলার দক্ষিণ টেরিয়াইলের বাসিন্দা সরোয়ার উদ্দিন।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কারণে নয় বরং সুবিধা বঞ্চিত বেকার যুবকদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি। প্রতিদিন ১৫-২০ জন ফেরিওয়ালা তার কাছে প্লাস্টিকজাত বর্জ্যগুলো কেজি ৩৫ টাকা মূল্যে বিক্রি করে। তাতে ফেরিওয়ালারা অন্যান্য পণ্য বাদে শুধুমাত্র প্লাস্টিকজাত বর্জ্যে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করে। আড়তদার আনোয়ার হোসেন বলেন, এসব পন্য আমরা স্থানীয় বাজারসহ সারা দেশে সরবরাহ করছি।
তাতে আমাদের নিজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়ছে বিকল্প কর্মসংস্থান। দক্ষিণ ইদিলপুরের বাসিন্দা গোলাম সাদেক বলেন, সীতাকুণ্ডের উত্তর বাজারে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে বেশ কিছু প্লাস্টিক বর্জ্যরে রিসাইক্লিং ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান। তাতে বাড়ছে বেকার যুবকদের অসংখ্য কর্মসংস্থান। সীতাকুণ্ড আইনজীবি কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ব্যবহার শেষে জমানো প্লাস্টিক সামগ্রীর বর্জ্যরে মাধ্যমে বাড়তি আয় সহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি খুবই ইতিবাচক বলে আমি মনে করি।
তাতে অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য যত্রতত্র নিক্ষেপ না করে বসতবাড়িতে আলাদা ভাবে সংরক্ষণের অভ্যাস গড়ে উঠাসহ বাড়ছে জনসচেতনতা। তিনি প্লাস্টিক বর্জ্যরে রিসাইক্লিং ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আরো বৃদ্ধি করার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বদিউল আলম বলেন, ব্যবহৃত জমানো প্লাস্টিক বর্জ্যরে বিনিময়ে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কেনা যাবে গৃহে ব্যবহৃত পন্য সামগ্রী। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে আমাদের প্রকৃতি। পরিচ্ছন্ন থাকবে পানি নিষ্কাশনে ব্যবহৃত ড্রেন, খাল বিল ও কৃষি জমি।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL