প্রায় তিন দশক কক্ষপথে থাকার পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে টুকরো টুকরো হয়ে গেল একটি কৃত্রিম উপগ্রহ। তার অধিকাংশ টুকরো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কয়েকটি টুকরো গিয়ে পড়েছে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে।
এই ইউরোপীয় কৃত্রিম উপগ্রহ ইআরএস-২ ১৯৯৫ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। তার তিন বছর কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু সে ১৩ বছর আগে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। বুধবার সেই উপগ্রহটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে বলে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) জানিয়েছে।
২০১১ সালের পর থেকে এই উপগ্রহটি কক্ষপথ থেকে সমানে সরে আসছিল। বুধবার এটি পৃথিবীর ৮০ কিলোমিটার উপরে এসে পৌঁছায়। তারপর এটি পৃথিবীর বয়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ে। এরপরই তা টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এই কৃত্রিম উপগ্রহটির ওজন ছিল আড়াই টন।
ইএসএ জানিয়েছে, এই কৃত্রিম উপগ্রহকে তারা পরিকল্পনা করেই পৃথিবার বায়ুমণ্ডলে নিয়ে এসেছে। কারণ, কক্ষপথে থাকলে তা অন্য কৃত্রিম উপগ্রহের ও আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের বিপদের কারণ হতে পারত। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এভাবে ঢুকলে অধিকাংশ কৃত্রিম উপগ্রহই পুড়ে ছাই হয়ে য়ায়। কিছু টুকরো সমুদ্রে গিয়ে পড়ে।
ইএসএ-র বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই উপগ্রহ-বর্জ্য থেকে মানুষের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া পৃথিবার বায়ুমণ্ডলে ঢুকে তা টুকরো টুকরো হয়ে যায়, অধিকাংশ টুকরোই পুড়ে যায়।
ইএসএ জানিয়েছে, কারো মাথায় একটা টুকরো পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম(একশ কোটির মধ্যে এক ভাগ)।
ইআরএস-২
প্রথমে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল ইআরএস-১। তার চার বছর পর ১৯৯৫ সালে পাঠানো হয় ইআরএস-২। এটা ছিল সেই সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে অত্যাধুনিক রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট। ১৬ বছর ধরে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন, মেরুর বরফ গলে যাওয়া, সমুদ্রে জলস্তর বেড়ে যাওয়া, সমুদ্র গরম হয়ে ওঠার মতো বিষয়ে প্রচুর তথ্য পাঠিয়েছে এই কৃত্রিম উপগ্রহ।
ওই উপগ্রহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উপর নজর রেখেছে। বিশ্বের সুদূর প্রান্তে বন্যা বা ভূমিকম্পের বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL