০৩-ডিসেম্বর-২০২৪
০৩-ডিসেম্বর-২০২৪
Logo
সম্পাদকীয়

ওষুধের উচ্চ মূল্য

দিন পরিবর্তন ডেস্ক

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-০৬ ২০:২৬:১০
...

মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে

যে ওষুধ জীবন বাঁচায়, সে ওষুধ যদি ক্রয়-ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে যায়, তাহলে মানুষের জীবন বাঁচবে কীভাবে? ওষুধের মূল্য দুই বছরে ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধ ক্রয়ে সামর্থ্য হারাচ্ছে মানুষ। এমনই একটি সংবাদ দৈনিক দিনপরিবর্তনে প্রকাশিত হয়েছে।

 ওষুধ ক্রয়ে মানুষের সঙ্গতি কমেছে। যাদের আর্থিক সঙ্গতি কম, কোনো রকমে ধার-দেনা করে ওষুধ কেনে, তাদের অবস্থা বেশি  শোচনীয়, কেউ কেউ অন্যের সহায়তা নিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছে। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে এবং ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ার কারণে ওষুধের দাম বেড়েছে। তাই বলে দুই বছরে ৭৫ শতাংশ? এটা অবিশ্বাস্য হলেও অতীব সত্য। অবস্থা দৃষ্টে মনে হতে পারে ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে এই উচ্চমূল্য নির্ধারণ করেছে।

এটা ঠিক, দেশে যে ওষুধ তৈরি হয়, তার বেশির ভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচা মাল দিয়ে তৈরি। ওষুধ তৈরির ৮০ শতাংশ কাঁচা মাল আমদানি-নির্ভর। যার ফলে দেশে উন্নতমানের ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। আর এই কারণে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানসম্পন্ন ওষুধ রপ্তানি করা যায়। তবে পাশাপাশি এটাও সত্য যে, আমাদের নিজেদের তৈরি ওষুধ দিয়ে দেশীয় চাহিদার প্রায় ৯৭ শতাংশ নিবারণ করা হচ্ছে। এটা জাতির জন্য বড় প্রাপ্তি। এটা কিন্তু ওষুধ শিল্প-সংশ্লিষ্টদের বড় অর্জনও বলা যায়। এর বাজার পরিধিও কম নয়। দেশে ওষুধের বাজার ২৫ হাজার কোটি টাকার। ওষুধের কাঁচামাল আগেও আমদানি করো হতো, এখানো একই ধারায় আমদানি করা হচ্ছে। তবে আগের চেয়ে কাঁচা মালের মূল্য যে বেড়েছে- এটা নিশ্চিত। তবে অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজারের একটা মূল্য ব্যবস্থাপনা থাকবে না, তা কী করে হয়?

আমরা জানি, দেশে একটা ওষুধনীতি আগেই করা হয়েছে। তবে সেই নীতিতে ওষুধের মূল্য ব্যবস্থাপনা সংযোজিত কি না আমরা জানিনা। ওষুধকে যেমন আমরা রপ্তানি পণ্য বানিয়ে দিতে পেরেছি, তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা নিবারণের সামর্থ্যও অর্জন করেছি। এজন্যই বাজার মূল্যের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা থাকা দরকার। জনগণের সামর্থ্য অনুযায়ী ওষুধের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা দরকার। এজন্য ওষুধ উৎপাদনকারীদের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধিদের মতামতের সমন্বয় থাকা জরুরি। তা না হলে জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে না, এটিকে দেখা হবে কেবলই ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিতে। আর সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা না হলে দেশ গড়ার কাজে বিভিন্ন খাতে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে কীভাবে? এজন্য জরুরিভাবে ওষুধের মূল্যের ন্যায্যতা নিশ্চিত করা আবশ্যক। সেই সঙ্গে এই শিল্পকে আরো উজ্জীবিত করতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার।

আমরা মনে করি, জনগণের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠবে। এবং অতীতের মূল্যের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হবে। মানুষ স্বস্তির সঙ্গে ওষুধ ক্রয় করতে পারবে- এটাই দেশবাসী প্রত্যাশা করে।