০৩-ডিসেম্বর-২০২৪
০৩-ডিসেম্বর-২০২৪
Logo
সম্পাদকীয়

রপ্তানির জগতে হোয়াইট ফিশ

দিন পরিবর্তন ডেস্ক

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-১৯ ১৯:১৩:১৪
...

কর নির্ধারণ নিয়ে ভাবতে হবে

দেশে কর্মসংস্থান ও রপ্তানি আয় দুটোই জরুরি বিষয়। বেকার সমস্যার এই দেশে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান দরকার, অন্যদিকে তেমন রপ্তানি আয়বৃদ্ধি করে অর্থনীতিকে আরো উজ্জীবিত করা দরকার। আর দুটি বিষয় যদি একই ক্ষেত্র থেকে উদ্ভব হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই অতি গুরুত্বপূর্ণ। এমনই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে হোয়াইট ফিশ রপ্তানির ক্ষেত্রে।

দৈনিক দিনপরিবর্তনে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়েছে, ইউরোপ-রাশিয়ার বাজারে প্রক্রিয়াজাত হোয়াইট ফিশ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। ইউরোপ থেকে হোয়াইট ফিশ আমদানি করে তা প্রক্রিয়াজাত করার পর আবার তা রপ্তানি করা হবে। সংবাদটি দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য গুরুত্ববহ।

লাখো বেকারের দেশে যদি কর্মসংস্থান সৃষ্টির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়, তাহলে এটা নিঃসন্দেহে শুভ সংবাদ। বেকার সমস্যায় জর্জরিত এই দেশে যুবশক্তির কাছে আশার আলো। এ ধরনের নতুন নতুন কর্মপরিধি সৃষ্টি হোক- এটা সবারই প্রত্যাশা। পাশাপাশি রপ্তানি আয় বৃদ্ধির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

এ কারণে হোয়াইট ফিশ রপ্তানিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন এই পণ্য রপ্তানির প্রচেষ্টাকে সহায়তা দিতে হবে। হোয়াইট ফিশ বলতে, কড, হ্যাডক, হেক ও শোলের মতো কয়েক প্রজাতির মাছকে বোঝায়। এই মাছ রপ্তানিতে শুল্ক একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের যেকোনো ক্ষেত্রে শুল্ক তুলনামূলকভাবে বেশি-এই বিষয়টি এখানেও স্পষ্ট হয়েছে। যেকোনো ক্ষেত্রে কর আদায়ের পরিমাণ যেন উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা হয়ে না দাঁড়ায়- এজন্য সতর্ক থাকতে হবে। যেখানে কর দিয়ে উন্নয়ন হয়, সেখানে কর আসার পথগুলো তো রুদ্ধ করা যায় না? প্রয়োজনে নতুন নতুন কর আসার পথ তৈরি করতে হবে। রপ্তানি করা হোয়াইট ফিশের মূল্যসংযোজন কর ৪০ শতাংশ। আর বর্তমানে হোয়াইট ফিশ আমদানিতে শুল্কের পরিমাণ ৫৮ শতাংশ। এত উচ্চ করের চাপে একটি শিল্পমুখী রপ্তানি পণ্য বিশ্ববাজারে প্রবেশ করতে বাধাগ্রস্ত হবে কি না, তা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। অনেক রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু হোয়াইট ফিশ আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে এটা এখনো প্রযোজ্য হয়নি।

তবে এটা আশার আলো যে, এ নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তরে একটি সভা হয়েছে। সভায় মৎস্য অধিদপ্তর, রাজস্ব বোর্ড, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সংবাদে স্পষ্ট করা না হলেও এটা বোঝা যায়, রপ্তানির এ নতুন উদ্যোগকে সফল করতে তারা সচেষ্ট রয়েছেন।

যা-ই হোক, ওই আলোচনার উদ্দেশ্য সফল হলে যদি হোয়াইট ফিশ রপ্তানিতে গতি আসে, তাহলে শ্রমের উচ্চমূল্যের কারণে যে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি সস্তা শ্রমের পণ্য নতুন আলো ছড়াবে এবং তা কর্মসংস্থানের নতুন সীমানা রচনা করবে- এটা নিশ্চিত।

আমরা মনে করি, অবশ্যই হোয়াইট ফিশ রপ্তানির বিভিন্ন পর্যায়কে নির্বিঘ্ন করা হবে। এই জন্য সরকারের সব অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সমন্বিত সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তাহলেই উন্মোচিত হবে রপ্তানির আরেকটি সোনালি দিগন্ত।

/মামুন