১৮-এপ্রিল-২০২৪
১৮-এপ্রিল-২০২৪
Logo
সিলেট

কৃষকদের অর্থায়নে হচ্ছে পাকা রাস্তা

প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২১-০৩-০৬ ১৬:১৩:১০
...

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের নলুয়ার হাওর সড়ক। ফসল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত একমাত্র রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মারাত্মক ভোগান্তিতে ছিলেন দুই সহস্রাধিক কৃষক। রাস্তাটির জন্য ছুটেছেন বিভিন্ন দফতরে, করেছেন একাধিক আবেদন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরেও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেদের অর্থায়নেই সড়কটি নির্মাণের কাজে নেমেছেন কৃষকরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে সড়কটি পাকা করার কাজ শুরু হয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, জগন্নাথপুর পৌরসভার শেরপুর এলাকা থেকে নলুয়ার হাওরের হরতাজপুর (ত্রিশ নামের) সড়কটি পাকাকরণের জন্য কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে তাতে কোনো লাভ হয়নি। সড়কটি নির্মাণে কোনো কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে কৃষকরা নিজেদের অর্থায়নে এটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। ৬০০ ফুট দীর্ঘ রাস্তাটি পাকাকরণের কাজে ব্যয় হবে সাড়ে ৭ লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জগন্নাথপুর পৌরসভার ইকড়ছই, ছিলিমপুর, বলবল, ভবানীপুর, শেরপুর-যাত্রাপাশা, খালিকনগরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় দুই হাজার কৃষক পরিবার ওই রাস্তাটি ব্যবহার করে নলুয়া হাওরের বোরো ফসল ঘরে তোলেন। কিন্তু বোরো মৌসুমে কাদার কারণে সড়কটি ব্যবহারের প্রায় অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কৃষকরা। 

এ বিষয়ে পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান জানান, এ সড়ক দিয়ে নলুয়ার হাওরের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বোরো জমির ধান তোলা হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটিতে কাদা হয়ে যায়। তখন সব ধরনের যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এলাকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে সড়ক পাকাকরণ কাজের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।

কৃষক বকুল গোপ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি পাকা না হওয়ায় প্রতি বছর বৈশাখ মাসে ধান তুলতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সে কারণে অনেক কৃষকই জমি অনাবাদি রেখেছেন। প্রতি বছর ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও ধান উত্তোলনের সড়ক নির্মাণে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া দুঃখজনক। তাই আমাদের টাকায় আমরা সড়ক নির্মাণ করছি।

কৃষক লাল মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমে পাকা ধান নিয়ে যেতে খুব কষ্ট হয়। তাই আমরা সব কৃষকরা একত্রিত হয়ে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য জগন্নাথপুর উপজেলা এলজিইডি ও পৌরসভায় আবেদন করেছি। কিন্তু দিনের পর দিন চলে গেছে সড়কটি পাকা হয়নি। তাই আমরা আমাদের নিজস্ব টাকায় সড়কটি পাকা করেছি।

স্থানীয় সরকার জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, সড়কটি পৌরসভার অংশে রয়েছে। এটি এলজিইডির আইডিবিহীন সড়ক। তবে সড়কটি গেজেট হলে আমরা নির্মাণ করতে পারব।

জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র মেয়র আক্তার হোসেন বলেন, সড়কটি পৌরসভার আওতাধীন কিনা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে উদ্যোগ নেব আমরা।