শামছুল আলম আখঞ্জী, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা:
হাওরের প্রদতলে কৃষকের কষ্ট অর্জিত রোপণ করা বোরোধানের চারায়, সুফল বয়ে আনবে,এই ফাল্গুনের বৃষ্টি। এমনটাই ধারণা করছেন স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীরা।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার নিন্মাঞ্চলের মানুষ এক বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। এতে যাহা আয় হয়, তা দিয়ে চলে
পরিবারের ভরণপোষণ। আর যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের রোষানলে পড়ে, ফসল বিনষ্ট হয়। স্থানীয় কৃষক পরিবার পড়ে যায় বিপাকে। দিশেহারা হয়ে খোঁজে বিকল্প কর্মসংস্থান, নতুবা ঋণ দফা করে চলে সংসার। তাই কষ্টার্জিত ফসল নিয়ে চলে অনেক বিশ্লেষণ।
এই ফসলের কার্যাদি শুরু হয়। কার্তিকের শেষে বীচতলায় বীচবপন,অগ্রহায়ণের শেষ-পৌষের শুরুতেই জমিতে রোপণ। শনি, মাটিয়ান, পাইল, মহালিয়া,গুরমাসহ ছোট বড় ২৩টি হাওরে এই নিয়ম।
এখনকার কৃষক রঙিন স্বপ্ন দেখে কাটান, ফাল্তুন- চৈত্রের বেলা। সব প্রতিকূলতা যখন, কাটিয়ে বৈশাখের শুরুতে পাকাঁ ধান ঘোলায় উঠানোতে ব্যস্ত সময় পাড় করে, তখন ভুলে যায়, কৃষক- কৃষাণী কষ্টের সকল যন্ত্রনা। রঙিন স্বপ্নের বাস্তবায়নে, দেয় মুচকি হাসি।
হাওরের বুকে রোপণ করা, বোরোধানের চারাগাছে কৃত্রিম প্রযুক্তিতে সেচ বা বিভিন্ন উপকরণ দেওয়ার নেই কোন সুব্যবস্তা। যাঁর ফলে প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল এখনকার মানুষ। যুগ যুগ ধরে চলছে এ ধারায় । এ কারণে প্রাকৃতিক বিষয়ের কোনো কিছু হলেই, চুল- চেরা চলে বিশ্লেষণ। তাই ত বুধবার রাতের ধমকা হাওয়া আর বৃষ্টিতে,কৃষকের মনে সুখের ছোঁয়া দুলখাচ্চিল,আর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা অবর্ধি কখনো মশল ধারে বৃষ্টি, কখনো গুরিগুরি বৃষ্টিতে ভিজে গেছে ফসলের মাঠ, অনেক জায়গায় জমে গেছে পানি। আকাশ জুড়ে রয়েছে মেঘাচ্ছন্ন। সূর্যের আলোর আভাস মিলছে না,এসব এলাকায়। তাই স্থানীয় কৃষকগণ মনে করছেন এই ফ্লাগুনের ৭,৮ (তারিখ) এর মশল দ্বারেই বৃষ্টি, রহমতের বৃষ্টি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তাঁরা।
হাওর পাড়ের কৃষক শাহ্ মনজুর বলেন, এখন যে বৃষ্টি হয়েছে চারাগাছের মুখে পড়ছে,যৌবন আসবে ধান গাছে। অনেক পোকা মাখর যাবে মারা। আর কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে, আশানুরুপ ফসল পাবো আশা রাখি মনে।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ছোট বড় ২৩টি হাওরে ১৭হাজার ৪শত হেক্টর ভূমিতে বিভিন্ন ধরনের
বোরোধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন গুণ মে:টন চাউল।
তাহিরপুর উপজেলার সাবেক কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এ বৃষ্টি বোরোধানের চারাগাছে ধান উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে,তবে বীজতলায় পানি জমে গেলে
কিছুটা ক্ষতি সাধন হবে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL