২১-নভেম্বর-২০২৪
২১-নভেম্বর-২০২৪
Logo
সম্পাদকীয়

নতুন দিগন্তে মেট্রোরেল যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন হোক

দিন পরিবর্তন ডেস্ক:
প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-১৭ ১৭:৪১:২৪
...

রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগসন্ধিক্ষণের সূচনা করেছে মেট্রোরেল। এ অভিযাত্রায় ধারণার বাইরে সাফল্যের শিখরে আরোহণ করেছে এ রেলসেবা। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যোগাযোগে এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। প্রতিদিন গাদাগাদি করে চড়েও যাত্রীদের মুখে শান্তির হাসি। সময় ও অর্থ দুই বাঁচিয়ে দিচ্ছে মেট্রোরেল।

দৈনিক দিন পরিবর্তনে গতকাল প্রকাশিত এক সংবাদে এমনই চিত্র ওঠে এসেছে। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, ১০-১২ মিনিট পরপর যাত্রী বহন করছে মেট্রোরেল।

প্রতিবার ১ হাজার ৭৫০ জন করে যাত্রী যাতায়াত করতে পারে। দিনে ১৫২ বার যাতায়াত করছে। এটা বেড়ে খুব তাড়াতাড়ি ১৭৮ বার যাতায়াত করবে। ২ লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী দিনে পরিবহন করার সক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত ৩ লাখ কার্ড ইস্যু হয়েছে নিত্যদিন চলাচলে আগ্রহী যাত্রীদের মধ্যে।

সংবাদের উল্লিখিত ওপরের তথ্যগুলো মেট্রোরেল নিয়ে বিগত দিনের আশাবাদকে সম্পূর্ণরূপে আলোর মুখ দেখিয়েছে। মেট্রোরেল নিয়ে ভবিষ্যৎ কল্পনাকে এমনভাবে বর্তমান বাস্তবতায় পাওয়া যাবে- তা কখনো ভাবা যায়নি। যাত্রীর ঢল প্রমাণ করেছে, মানুষের চাহিদাকে কীভাবে রূপায়িত করা যায়? তার অনন্য উদাহরণ আজ মেট্রোরেল। কোনো জাতির উন্নয়নের জন্য প্রথমে প্রাধান্য দেওয়া হয় সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থাকে। দেশজুড়ে সুষ্ঠু যোগাযোগ কাঠামো না থাকলে মানুষের চলাচল বিঘ্নিত হয়। আর সমন্বিত উন্নয়ন হয় বাধাগ্রস্ত। ফলে অর্থনীতির চাকা সমানতালে ঘুরে না। বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। সমগ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নেমে আসে স্থবিরতা। জাতি পিছিয়ে যায়।
রাজধানীতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটা প্রতিবন্ধকতা দীর্ঘদিন জিইয়ে ছিল। মহানগরীর এপাশ থেকে ওপাশে যেতে মানুষকে পোহাতে হতো ভোগান্তি। যার ফলে যানজটে আটকে পড়ে কর্মজীবী মানুষের লাখ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হতো। অনেক ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ নির্মাণ করেও মানুষের যাতায়াতকে নির্বিঘ্ন করা যায়নি।

কিন্তু মেট্রো রেল সেই সব জটিল বাধা অতিক্রম করে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আজ রাজধানীর এক বৃহৎ অংশের মানুষ স্বল্প খরচে, স্বল্প সময়ে, ইচ্ছা মাফিক বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রত্যাশিত গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে। এখন আর কর্মক্ষেত্রের কর্মঘণ্টা যানজটে নষ্ট হয় না। দেশের প্রাণকেন্দ্র রাজধানীর কর্মমুখী মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলে যেতে পারে কাক্সিক্ষত স্থানে।

দীর্ঘ কর্মযজ্ঞের পর ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয় মেট্রোরেল । তারই পরিপূর্ণতা দেখা যাচ্ছে এখন। আজকের প্রধানমন্ত্রীর যতগুলো কীর্তিগাঁথা আছে, তার মধ্যে অন্যতম সংযোজন আজ হয়ে গেছে মেট্রোরেল। সহজ যোগাযোগ যে উন্নয়নের আরেক শর্ত, তারই সংযোজন ঘটেছে মেট্রোরেল দিয়ে।

বাস যোগাযোগ কদিন আগেও অপরিহার্য ছিল। এখন এই রুটগুলোতে বাস যাত্রী সংখ্যাক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। উদ্বেগের পড়েছেন মালিক, শ্রমিকসহ এই খাতের সংশ্লিষ্টরা। যাতায়াতে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে গিয়ে প্রকৃত উন্নয়নের জোয়ারে পুরনো ধারা পিছিয়ে পড়বে এটা অস্বাভাবিক নয়।

অচিরেই মেট্রোরেলের বর্ধিত রুটগুলো আলোর মুখ দেখবে। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থায় উত্তরোত্তর নতুন মাত্রা যোগ হবে। মানুষের জীবনচলায় আসবে পরিবর্তন।

আমরা মনে করি, সদ্য চালু হওয়া মেট্রোরেল যেন কোনোরকম আরোপিত বাধাবিঘ্নে আটকে না পড়ে। এসব অতিক্রম করেই উন্নয়নের পথে সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে।