২১-নভেম্বর-২০২৪
২১-নভেম্বর-২০২৪
Logo
সম্পাদকীয়

রাজধানীর বায়ুদূষণ ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায়

দিন পরিবর্তন ডেস্ক

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-২২ ২১:০৪:০৮
...

ব্যবস্থা নিতে হবে দ্রুত:

বায়ুদূষণের মাত্রা যদি আশঙ্কাজনক থেকে আরো আশঙ্কাজনক পর্যায়ে চলে যায়, তাহলে মানুষের উদ্বিগ্নতা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে রাজধানী ঢাকাকে নিয়ে। বিগত কয়েক বছর থেকেই ঢাকার বায়ুদূষণ বিশ্বের কয়েকটি শহরের মধ্যেই দূষণ পরিসংখ্যানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু এবার সেই সব পর্যায় অতিক্রম করে একেবারে শীর্ষের কাছাকাছি।

গতকাল প্রকাশিত সহযোগী দৈনিকের এক খবরে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকা ছিল তৃতীয় অবস্থানে। গত বুধবার সকাল ১০টায় আইকিউএয়ার-এর মান সূচকে ঢাকার অবস্থান ছিল ১৬৭। একে অস্বাস্থ্যকর বলে ধরা হয়। সংবাদের আরও বলা হয়, ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান কারণ। গত বুধবারের ওই সূচকে বিশ্বে বায়ুদূষণে প্রথম স্থানে ছিল উজবেকিস্তানের তাসখন্দ ও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর। বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণের পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার।

ঢাকায় বায়ুদূষণের এই মাত্রা নতুন নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে বায়ুদূষণের এই ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণে যেসব কারণ চিহ্নিত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ইটভাটা। ঢাকার চারদিকে বৈধ-অবৈধ মিলে অনেক ইটভাটা ছড়িয়ে রয়েছে। এসব ইটভাটার বেশির ভাগই অবৈধ। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন। ভাটায় কয়লা পোড়ানোর প্রতি বিশেষ নির্দেশনা থাকলেও এসব ভাটায় পোড়ানো হয় কাঠ। যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা ভাটাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই ফসলি জমির টপ সয়েল নিয়ে ইট তৈরি করছে। এসব ইটভাটায় উঁ”ু চিমনি ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও সেটাও মানা হচ্ছে না। যার ফলে এই সব ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী জুড়ে।

রাজধানীর বায়ুদূষণের আরো একটি কারণ নির্মাণকাজ। নগরে ব্যাপক স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নির্মিত অবকাঠামোগুলো প্রচুর ধূলিকণা সৃষ্টি করছে। এসব ধূলিকণা মিশে যাচ্ছে রাজধানীর বাতাসে। তাছাড়া সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, বিদ্যুৎ বিভাগ ও টেলিফোন বিভাগ প্রায় নগরের রাস্তাগুলো খোঁড়াখুঁড়ি করে উন্নয়ন কাজ করে। এসব কাজে সৃষ্ট ধূলিকণা সর্বক্ষণ মিশছে রাজধানীর বাতাসে। সিটি কর্পোরেশনের আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণ দুই যথাযথ নিয়মে হচ্ছে না বলে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। খোলামেলাভাবে আবর্জনা ব্যবস্থাপনার আরো উন্নয়ন হওয়া জরুরি। এসব আবর্জনা থেকে ঘটছে বায়ুদূষণ।

রাজধানী ঢাকা প্রায় এক দশক আগে থেকে পরিবেশ দূষণের তালিকায় ছিল। এই পরিস্থিতি বছর বছর ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে শহরের নাগরিক জীবনে।
বায়ুদূষণ থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে হবে। এজন্য কারণগুলো পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে এই বায়ুদূষণ জনজীবনের ওপর সরাসরি প্রভাব থেকে অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে শুরু করবে। বায়ুদূষণের অধিক মাত্রার কারণে বিদেশি বিনিয়োগের ওপর প্রভাব পড়বে। স্বাস্থ্যসচেতন বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও পিছু হটতে পারেন এ কারণে।

আমরা মনে করি, অচিরেই বায়ুদূষণের প্রতিকারে ব্যবস্থা নেয়া সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। একে আর অবহেলা করা উচিত নয়।

/মামুন